বাহুল্য (কবিতা)
-------------------------------------------------------------------
ফুল ছিল হাতে, এক গোছা লাল সাদা চুড়িও কিনেছিলাম।
সামনে দিয়ে হন হন করে চলে গেলে।
দিতে চেয়েছিলাম। টিপ্পনীতে প্রত্যুত্তর দিলে।
হেসেছিলাম। বোকা সেজে।
ছল ছল চোখ ছিল। মুখ লুকিয়েছিলাম লাজে।
এখন বুঝি টিউশনির টাকায় কেনা উপহারটুকু, কতটা ছিল নস্যি, ক্ষুদ্র, ধুলিকণা তূল্য।
তবে তা তোমার অবহেলা পেলেও আমার জন্য ছিল বাহুল্য।
কত কাল কেটে গেছে। এখনো হাতে ব্যানসন।
বাড়ির ছাদ-বাগানের হাসনাহেনার তীব্র গন্ধে সম্মোহন।
পাশের বাড়িতে উচ্চ ভলিউমে 'সোলস' এর গান।
এলো মেলো স্মৃতি। দিকহীন ভাবনা বহমান।
বহু কষ্টে যখন তোমার মন পেলাম কত ব্যানসন যে নষ্ট করেছ।
আজ ছাড়ব। কাল ছাড়ব।... ছাড়া আর হল না।
প্রথম প্রেমকে তুমি ছাড়াতে পারলেনা।
তবে তোমার সামনে খেতাম না। যদিও ধরা পড়াটা রোজকার ঘটনা।
এরপর ঝগড়া। সব শেষে টিএসসিতে রাস্তার ধারে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে রঙ্গীন ভাবনার জাল বোনা।
হা হা... সময়গুলো দৌড়ে পালাত।
ফার্স্ট ক্লাসটা জরুরি ছিলনা। তোমার উরো চুলের গন্ধটা জরুরি ছিল। পাগল করে দিত।
সব কিছুর চেয়ে তোমার সঙ্গটা ছিল অমূল্য
এখন মনে হয়... হয়ত সবটাই ছিল বাহুল্য।
চাকরি খুজছি। তুমি জানতে আমি চাকর হতে পারবনা।
দায়বদ্ধতা আমার জন্য না।
টিউশনির টাকা চাকরির ফরম ফিলআপেই শেষ। আধ বেলা খানা পিনা।
অন্য কিছু চাইতাম। কিন্তু তোমার বাবার শর্ত চাকরি!!
৪ টি বছর।... হন্যে হয়ে খুজেছি। একটাও পাইনি।
একটা সময় মেধা বা টাকা যেকোন একটা হলেই হত।
এখন চাকরির বাজরে মেধা টাকা দুটোই লাগে; বুঝিনি।
ব্যর্থ আমি। অনেক দূরে চলে গেলে।
সাত সাগড় তের নদীর ওপারে।
ফেস বুকে আমার ফেক আইডি কিন্তু তোমার ফ্রেন্ড।
লাস ভেগানসের লাকী হুইলের চাকার মত তোমার ভাগ্য এখন আকাশে উড়ে।
এখন আমি চাকরি করিনা। চাকরি দেই।
ব্যস্ততা আর প্রথম প্রেম ব্যানসন ছাড়া আর কোন সঙ্গীও নেই।
ব্যানসনের সাথে যুক্ত হয়েছে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি।
ভাল লোকেশনে একটা বাড়ি করেছি।
উঠতে নামতে দাড়ওয়ানের সালামের উত্তর দিচ্ছি।
কেটে গেছে যুগ। সময় নাকি ধ্রুব তূল্য।
তবে তোমার আমার সময়...
সেটা ধ্রুব ছিলনা। সেটা সবটাই ছিল বাহুল্য।
--------------------------
হাসান ইবনে আমিন
আরো পড়ুন-
Hasan Ebna Amin
0 Comments